জাপান ইন্টারন্যাশনাল প্যারা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশের দুই প্যারা শাটলার (বিশেষ ক্রীড়াবিদ) মোহাম্মদ আলী ইমাম এবং জয়তু ধর। শুক্রবার, ১০ নভেম্বর টোকিওতে অনুষ্ঠিত প্যারা ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে ডাবলস ইভেন্টে দুজনই নিজ নিজ খেলায় জয় পেয়ে সেমিফাইনাল পা রাখেন। প্রথমবারের মতো জাপান প্যারা ব্যাডমিন্টন ইন্টারন্যাশনালে অংশ নিয়েই বাজিমাত করল বাংলাদেশ।
সেমিতে ওঠার মধ্য দিয়ে ইমাম-জয়তু নিশ্চিত করেছেন ব্রোঞ্জ পদক । শনিবার ফাইনালের ওঠার লড়াইয়ে নামবেন তারা। দুই শিষ্যের এমন সাফল্যে দারুণ খুশি বাংলাদেশ প্যারা ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক শাটলার- জাতীয় কোচ এনায়েত উল্যা খান।
শিষ্যদের এত বড় সাফল্য প্রসঙ্গে জাপান থেকে মুঠোফোনে এনায়েত উল্যা খান জানান, "আমি প্রথমে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাব আমাদের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মহোদয় জাহিদ আহসান রাসেল স্যারকে। গত বছর আমরা মন্ত্রী মহোদয়ের সহযোগিতায় জাপানে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নে অংশ নেই। ওই টুর্নামেন্টে ভালো খেলার দরুণ জাপানের চোখে পড়ি আমরা। সেখান থেকে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের প্যারা ব্যাডমিন্টনের সম্পর্কের শুরু। সেই সুবাদে জাপানের সার্বিক এবং আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় এবার আমরা জাপান প্যারা ইন্টারন্যাশনাল ব্যাডমিন্টনে খেলছি। আজ আমাদের প্যারা ব্যাডমিন্টনের জন্যই শুধু নয়, বাংলাদেশের জন্যও অনেক বড় গৌরব এবং আনন্দের দিন।‘’
ডাবলসে বাংলাদেশের আলী ইমামের সঙ্গী ছিলেন নিউজিল্যান্ডের ওয়াজতেক। ইমাম- ওয়াজতেক জুটি ভারতের শুভ্রজিৎ -দিনেশ জুটিকে সরাসরি ২১-১২ এবং ২১- ১৯ পয়েন্ট ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেন। অপরদিকে বাংলাদেশের আরেক প্যারা শাটলার জয়তু ধরের সঙ্গী ছিলেন ভারতের মঞ্জুনাথ। জয়তু- মঞ্জু জুটি কোয়ার্টার ফাইনালে ক্যামেরুনের এমাগুই- ইতিয়েন্নি সঙ্গা জুটিকে সরাসরি ২১- ০৮ এবং ২১- ০৯ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
নিজেদের এমন সাফল্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন ইমাম এবং জয়তু। কান্না জড়ানো কণ্ঠে জাপান থেকে মুঠোফোনে তারা জানান, আমরা প্রতিবন্ধী। ভালোবেসে অনেকে আমাদের বিশেষ ক্রীড়াবিদ বলে ডাকেন। আমাদের আগে কোনো সম্মান-মর্যাদা ছিল না। প্যারা ব্যাডমিন্টন এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মহোদয় রাসেল স্যার আমাদের প্রতি অনেক সদয়। আমরা মন্ত্রী মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সম্মানিত কোচ এনায়েত স্যারের প্রতি। এনায়েত স্যার না থাকলে ব্যাডমিন্টন শিখতে পারতাম না। জাপানে এত বড় আসরেও অংশ নিতে পারতাম না। আমরা আমাদের এই সাফল্য, ব্রোঞ্জ পদক জয় এনায়েত স্যারকে উৎসর্গ করছি। দেশবাসীসহ সকলে দোয়া করবেন আমরা যেন সেমিফাইনালেও ভালো খেলতে পারি।"
No recent posts available.