টিমমেটদের সাথে খুনসুটি, অন্যের বল কুড়িয়ে আনা কিংবা একটা ছবির আবদার...
এই সজীবন সাজানাকে আপনি হয়ত চেনেন, হয়ত চেনেন না। সেটা খুব বড় বিষয়ও নয়। কারণ, ভারতের নারী দলের এত এত তারকার ভিড়ে তিনি নিজেও লাইমলাইট পান কমই। তার আজকের পর্যায়ে উঠে আসার গল্পটা ভীষণ অনুপ্রেরণাময়। এই যে এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সিলেটে, একটা সময় ছিল, যখন ব্যাটই কিনতে পারতেন না এই সাজনা। অনেকটা সময় কেটেছে নারিকেলের ডাল দিয়ে বানানো ব্যাট দিয়ে খেলেই।
গল্প আছে আরও। কেলারা বন্যায় ভিটেমাটি হারিয়েছেন। তবে সব হারালেও নিজে হারাননি৷ ঠিকই ফিরেছেন। জীবন শিখেছেন বাস্তবতা থেকেই। কেরালার ভয়ংকর বন্যা, অটো রিকশাচালক বাবা। ঠিকই ফিরেছেন সাজনা। কেরালা থেকে ক্রিকেট দুনিয়ায় নামা কামানো।
হাহাকার। এটা নেই, ওটা নেই, এসব নিয়ে চলছিল জীবন। সংগ্রামময় সেই সময়ের মধ্যেই কেরালার বয়সভিত্তিক দলেও ঠিকই সুযোগটা পেয়েছিলেন। তবে মাঠে যে যাবেন, সেই যাতায়াত ভাড়াটুকুও ছিল না। তবুও মনোবল হারাননি, ফিরেছেন ঠিকই।
লড়াইয়ের দিনে পারিশ্রমিক হিসেবে রোজ দেড়শ রূপি করে পেতেন। সেই এক লড়াইয়ের দিন ছিল সাজানার জন্য। কতো না পাওয়া, কতো হাহাকার, তবুও ফিরলেন জীবনের সঙ্গে লড়েই।
এইতো সদ্য শেষ হওয়া নারী আইপিএলে এই সাজনা যেনো হয়ে উঠেছিলেন জাভেদ মিঁয়াদাদ। ব্যাঙ্গালোরে ফিরিয়ে এনেছেন শারজাহর বিখ্যাত চেতন শর্মার বলে মারা মিয়াঁদাদের ছক্কার স্মৃতি। দিল্লির সাথে শেষ বলে পাঁচ রানের সমীকরণে মেরেছিলেন দারুণ এক ছয়। যা আবার ছিল তার নারী আইপিএলের তার খেলা প্রথম খেলা। এক ছয়ে কেরালার মানচিত্র নিয়ে গেছেন নারী ক্রিকেটের অনেকটাই ওপরে।
২০১৮ সালের কানা নামের এক তামিল মূভিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ক্রিকেটীয় মুভিতে ঠিকই ২০১৮ সালের ভারতীয় দলে খেলেছিলেন, বাস্তবে তা ২০২৪ সালে।
এই সিলেটেই তিনরঙা মাথায় চাপানো। প্রথমবার ভারতীয় জার্সিতে অভিষেক। কেরালায় সব তবে মুম্বাই সাজানাকে দিয়েছে নতুন জীবন। মুম্বাই এখন তার ঘরের মতো। তাকে কাইরন পোলার্ডও নামে ডাকে কেউ কেউ।