৭ মে ২০২৪, ১১:২৩ এম
কখনও হাসলেন, কখনো ভাবলেন, কখনও শুধু শুনলেন মনোযোগ দিয়ে... ভারতের নারী দলের তারকা ক্রিকেটার স্মৃতি মান্ধানাকে পাওয়া গেলো সিলেটেই। দুনিয়ার অন্যতম সেরা নারী ব্যাটারকে সিলেটের বিখ্যাত চায়ের কথাও জানানো গেলো। সঙ্গে জানলেন নিজেদের অনেক রেকর্ডও। তবে নিজেই টি-স্পোর্টসকে জানিয়ে দিয়ে গেলেন অসংখ্য গল্প।
আধুনিক নারী ক্রিকেটের অনেক রেকর্ড মান্ধানার নামে। কেবল টি-টোয়েন্টিতেই তিন হাজার পেরোনো রান। সাফল্য ঘোড়া ছুঁটছেই। আর এই সাফল্য রহস্য কী? প্রশ্ন শুনে, হাসলেন, ভাবলেন!
‘আমার সাফল্য? না, আমার সাফল্যের রহস্য মনে হয় কোনো রহস্য না থাকাই। আমি ক্রিকেটের খুব ভালো স্টুডেন্ট সম্ভবত। খেলাটার সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ১০ বছরের মতো আছি। দেখুন, ক্রিকেটটা বদলায় প্রতিনিয়ত। আমি চাই এই খেলাটার ভালো স্টুডেন্ট হয়ে থাকতে। কীভাবে খেলতে হয়, কোথায় খেলতে হয়? কেন খেলতে হয়? একদম ব্যাসিকে থাকা, কাজগুলো সহজ করা। এইতো। দিনের পর দিন নিজের কাজ করে যাওয়া।’
আরও পড়ুন: চতুর্থ ম্যাচেও বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের একপেশে জয়
বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছে ভারত। মান্ধানা খুশি পুরো দল নিয়েই। তবে আক্ষেপও আছে খানিকটা। ‘আমি দারুণ খুশি। ভালো একটা ডব্লিপিএল যাওয়ার পরে আমি এসেছিলাম এখানে এসে ভালো করি। একসাথে থাকা। বোলাররা দারুণ করেছে যদিও আক্ষেপ ফিল্ডিং একটু এদিক-ওদিক হয়েছে। ব্যাটিং ভালো হয়েছে। আমরা এখানে এসেছি পরিকল্পনা নিয়েই। বিশ্বকাপের আগে ভাল প্রস্তুতি নিতে।’
মান্ধানা বাংলাদেশের প্রিয় স্মৃতি কী জিজ্ঞেস করায় আগে কিছুক্ষণ ভাবলেন, হাসলেন... তারপর বললেন... ‘আমি মনে হয় ১৭ বছরের বাচ্চা ছিলাম যখন এখানে প্রথম আসি। আমার প্রথম বিশ্বকাপ ছিল বাংলাদেশে। এই সিলেটে এশিয়া কাপ জিতেছি। ওটা দারুণ ছিল।’
সিরিজটা জেতা নিশ্চিত করে মাঝের বিরতিতে ছুটিও কাটিয়েছে ভারতীয় নারী দল। ঘুরে দেখেছে সৌন্দর্যের সিলেট। আলস্যের দিন ব্যস্ত ছিল সাদা পাথরে। সিলেটে মুগ্ধ ভারতীয় ওপেনার। ‘দেখুন এখানকার উইকেট কিংবা সবকিছু বেশ ভালো। আমরা প্রায় এক বছর পর এসেছি এখানে। যদিও আমরা এসেছি ভিন্ন শহর থেকে। দারুণ মাঠ এটা। কখনও বৃষ্টি আবার কখনও না। কিন্তু দেখুন, আমরা সিলেটে দারুণ উপভোগ করছি।’
নারী আইপিএল জিতিয়েছেন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে। ক্লাবটির জন্য যা পরম আরাধ্য এক ট্রফি। টুর্নামেন্টের ভালো সব দিকও শুনিয়ে রাখলেন সিলেটে। ‘নারী আইপিএল দারুণ একটা টুর্নামেন্ট। এখানে দারুণ সব প্রতিভা রয়েছে। এটা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য দারুণ। এখানে খেলে ৫/৬ জন সবসময় জাতীয় দলের তৈরি হয়ে যায়। এটা দারুণ ব্যাপার। এটা ভারতীয় সেটআপে দারুণ কাজে দেয়। ক্রিকেটারদের দেখার জন্যও ডব্লিউপিএল খুব ভালো জায়গা।’
পুরো দুনিয়ায় দ্বিতীয় ওপেনিং জুটি হিসেবে পেরিয়েছেন দুই হাজার টি-টোয়েন্টি রান। শেফালি ভার্মাকে নিয়ে গড়ছেন প্রতিনিয়ত নানান কীর্তি। জুটি সাফল্যের রহস্যও খোলাসা করলেন। ‘শেফালীর সাথে ব্যাট করা সবসময়ই মজার। গেলো কয়েকটা বছরে আমাদের দারুণ বোঝাপড়া হয়েছে। কোন বোলারকে ও টার্গেট করবে, কাকে আমি এসব নিয়েই আলোচনা হয়। গেলো দুই বছরে আমরা নিজেদের ভূমিকা নিয়ে পরিস্কার। কখনও সে আক্রমণাত্মক হয়, তখন আমি অ্যাংকোরের ভূমিকায় থাকি। এই বোঝাপড়া দরকার। বিশ্বকাপে আশা করি বোঝাপড়াটা দারুণ হবে আমাদের।’
আরও পড়ুন: ১৪ বছর বয়সেই হাবিবার অভিষেক
সাফল্য? আরো ছুটতে চান। ২৭ বছর বয়স। নারী ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে তিন হাজার পার করেছেন আগেই। নামের সাথে জুড়তে চান অনেকগুলো বিশ্বকাপ। নিজের খুদে ভক্তদের জন্য জানিয়ে গেলেন, নিজের কাজ অনেক বেশি করে যেতে... ‘আমাকে যারা পছন্দ করে তাদের জন্য বার্তা হচ্ছে, আমি আদতে যা করতে পছন্দ করি তাই করি। আমি ব্যাটিং করতে পছন্দ করি৷ ক্রিকেটটা দারুণ টানে আমাকে। কখনো অনেকবেশি নেটে সময় কাটাই। নিজের কাজটা করে যেতে চাই সবসময়।’
বাংলাদেশকে মনে রাখতেই হচ্ছে, মান্ধানাকে, অনেকটা স্মৃতি নিয়ে যাবেন এই বঙ্গদেশ থেকে। আবার ফিরতেও হবে হয়তো। সামনেই যে ডাকছে বিশ্ব মঞ্চ, বিশ্বকাপ। বলে রাখা ভালো, শুভকামনা জানাতেই যাওয়ার সময় ঠিকই একটা বড়সড় ধন্যবাদ দিয়ে গেলেন আধুনিক নারী ক্রিকেটের অন্যতম সফল ব্যাটার। লোকে যাকে এক নামে স্মৃতি মান্ধানা নামেই চেনে, জানে, মানে।