নাহ, হলো না মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি। হলো না, প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে পাকিস্তানের মাটিতে ডাবল সেঞ্চুরি করা। তবুও ৩৪১ বলে ১৯১ রান। ২২ চার আর এক ছয় মুশফিকের ব্যাটে। আক্ষেপ কেবল একটাই, ডাবল সেঞ্চুরি না পাওয়া।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে এক মুশফিকেরই শুধু আছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। এর আগে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে মুশফিক ছাড়া ডাবল সেঞ্চুরি ছিল দুই জনের। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে করা তামিম ইকবালের ২০৬ এবং ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশটিতে করা সাকিবের ২১৭ রান। মুশফিজ আজ ৯ রানের জন্য আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরি মিস করায় বাংলাদেশ ব্যাটারদের ডাবল সেঞ্চুরির সংখ্যা সেই পাঁচই থেকে গেলো।
তবে রাওয়ালপিন্ডিতে ২০০ না পেলেও ডাবল সেঞ্চুরিতে রয়েছে মুশফিকের দারুণ সব রেকর্ডও। ১৯১ এর আগে তিন ডাবল সেঞ্চুরি ছিল। শুধুমাত্র উইকেটকিপার পরিচয়ে দুই ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। ক্রিকেট দুনিয়ার আর কোনো উইকেটকিপার ব্যাটার করতে পারেনি এই কীর্তি।
আরও পড়ুন: সেঞ্চুরিতে তামিমকে পেছনে ফেললেন মুশফিক
উইকেটকিপার ও অধিনায়ক হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি ক্রিকেট বিশ্বেই আছে কেবলই দুজনেরই। একজন মুশফিক আর অন্যজন সাবেক ভারত তারকা মাহেন্দ্রা সিং ধোনি। মুশফিক এখানেও একটু বেশিই বিশেষ, একমাত্র হিসেবে এমআর ফিফটিন তা করেছেন প্রতিপক্ষের ঘরে।
যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ২০১৩ সালে গলে মুশফিক করেছিলেন যে কীর্তি। রাওয়ালপিন্ডিতে চতুর্থ দিনে আরেকবার ফেরানো গেলো না যে স্মৃতি।
এই ম্যাচেই স্পর্শ করেছিলেন বাংলাদেশের জার্সিতে তিন ফরম্যাটে ১৫ হাজার রানের মাইলফলক। দ্বিতীয় ব্যাটার, মুশফিকের আগে যে কীর্তি ছিল কেবলই মুশফিকের বন্ধু তামিমের।
খেলছেন ক্যারিয়ারের ৮৯তম টেস্ট ম্যাচ। প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ১০০ টেস্ট বহু ক্রোষ দূরের পথ না মিস্টার ডিপেন্ডেবলের জন্য। বয়সে যতোই ৩৭ বছর ১০৭ দিন হোক, মুশফিকই তো এখনো নিবেদনের সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
এই রাওয়ালপিন্ডিতেই মুশফিক একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার ব্যাট করেছেন ১২ হাজার বল। কেবলই সংখ্যা। অন্য কোনো বাংলাদেশি ব্যাটার ব্যাট করেনি ৯ হাজার বলও। মুশফিকের টেস্টের নিবেদন বোঝাতে এই পরিসংখ্যানই যথেষ্ট।
টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান মুশফিকেরই। লাল বলের ক্রিকেটে ৬ হাজার রানও খুব বেশি দূরের না। রাওয়ালপিন্ডিতে টপকেছেন তামিমকে। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান এখন মুশফিকেরই।
এখনো টেস্ট খেলছেন, এমন খেলোয়াড়দের মধ্যে মুশফিকের চেয়ে লম্বা ক্যারিয়ার আর কারো নেই। ২০০৫ সালে লর্ডসে শুরু, ছুটছেন এখনো। সবচেয়ে ক্যারিয়ারের মালিক হয়েও এই অগাস্টেই খেলেছেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে। সেখানে ১৪ রান করলেও মূল ম্যাচে ঠিকই মেটালেন রান ক্ষুধা।
এর আগে চট্টগ্রামে ক্যাম্প করে গেছেন। করেছেন টানা অনুশীলনও। দেশব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতায় কারফিউতে সবকিছুই ছিল বন্ধ। তবুও এক মুশফিক ছিলেন টানা অনুশীলনে। আর মিরপুরের সব না থাকার দিনেও মুশফিকের থাকা নিয়মিত। সেই নিয়মিত হওয়ার নিয়তিতেই মুশফিকের এমন দারুণ ১৯১। যেখানে আক্ষেপ কেবল ডাবল সেঞ্চুরি না পাওয়া।