৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৭ এম
নানা কারণেই শুধু বাংলাদেশই নয়, ক্রিকেট বিশ্বের অনেক দেশেই সমর্থকদের কাছে নিজ দেশের পর দ্বিতীয় প্রিয় দল নিউজিল্যান্ড। প্রধান খেলা রাগবি হওয়ার পর ক্রিকেট খেলাটাকে তারা যেভাবে ধারণ করে, যেভাবে ক্রিকেট সংস্কৃতি অনুসরণ করে চলে মাঠে ও মাঠের বাইরে এবং দারুণ সব উদ্যোগ নেয়, সেসব প্রশংসার দাবিই রাখে। যেমনটা দেখা গেল নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জার্সি এবং দল ঘোষণার অন্যরকম এক আয়োজনে।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড দল ঘোষণা করেছিল একটি ভিডিও পোস্ট করে। সেখানে বোর্ডের কোনো কর্তা তো ননই, এমনকি ছিলেন না নির্বাচকরাও। গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে চমৎকার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটিয়ে সেই ভিডিওতে ১৫ জন খেলোয়াড়দের নাম ঘোষণা করেন তাদের বাবা-মা, স্ত্রী এবং সন্তানরা। সবারই প্রশংসা কুড়িয়েছিল নিউজিল্যান্ডের সেই উদ্ভাবনী দল ঘোষণার আয়োজন।
আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলেন উইলিয়ামসন-কনওয়ে, বিশ্রামে রাচিন
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সোমবার সকালে প্রকাশিত ভিডিওতে আসছে বিশ্বকাপের জন্য দল দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এবার অবশ্য প্রক্রিয়াটা ছিল আনুষ্ঠানিকই। সংবাদ সম্মেলনে কক্ষে ফরমাল ড্রেস পরিহিত অবস্থায় আসন নেন দুই সদস্য, নাম তাদের মাটলিডা ও এঙ্গাস। ‘বিশেষ অতিথি’ ছাড়া তাদের আর কোনো পরিচয় দেওয়া হয়নি।
চমকটা এখানেই। ভাবভঙ্গিতে বড় মনে হলেও আদতে দুই ক্ষুদে সদস্যকেই দল ঘোষণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুর্দান্ত উপস্থাপনায় সাবলীলভাবে এই দুজন একে একে ১৫ জনের নাম নেওয়ার পর দলের প্রতি শুভকামনাও জানান, ঠিক যেন দুজন অভিজ্ঞ দল নির্বাচকের মত। শেষে আবার এঙ্গাস প্রশ্নও ছুড়ে দেন, মিডিয়ার পক্ষ থেকে তাদের কাছে প্রশ্ন আছে কিনা, তা নিয়ে।
দল ঘোষণার দারুণ এই পদক্ষেপের পাশাপাশি নজর কেড়েছে বিশ্বকাপের জন্য নিউজিল্যান্ডের জার্সিও। সচরাচর কালো রঙয়ের জার্সিতে খেললেও ১৯৯৯ বিশ্বকাপে তারা খেলেছিল নীল জার্সিতে, যার সামনের দিকে ছিল বড় একটি ‘ফার্ন’ গাছের পাতা। সেই সময়ে এবং এখনও সেই জার্সির আবেদন রয়েছে যথেষ্টই।
নিউজিল্যান্ডের এবারের বিশ্বকাপের জার্সির ডিজাইনও করা হয়েছে বিখ্যাত ১৯৯৯ বিশ্বকাপের আদলে। যা ক্রিকেট ভক্তদের নস্টালজিকতায় ফিরিয়ে নিয়ে গেছে যেন সেই আসরেই, যেখানে মাঠ মাতিয়েছিলেন স্টিফেন ফ্লেমিং, ক্রিস কেয়ার্নস, ক্রিস হ্যারিস, নাথান অ্যাস্টল, গ্যাভিন লারসেন, ক্রেগ ম্যাকমিলান, রজার টুজ, ড্যানিয়েল ভেট্টোরিরা।
মাঠে ক্রিকেটারদের নিপাট ভদ্রলোকদের মত আচরণ, প্রতিপক্ষের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানোর কারণে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট দলকে সবাই ভীষণ পছন্দ করেন। ২০১৯ বিশ্বকাপে বাউন্ডারি নিয়মের বলি হয়ে যেভাবে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ জেতা থেকে বঞ্চিত হয়েও আজ অবধি সেটা নিয়ে একটা নেতিবাচক শব্দও বলেননি দলটির কেউই। যেখানে হরমেশাই দেখা যায় আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্ত নিয়েও ক্রিকেটারদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে।
এটাই নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট সংস্কৃতি। পুরো মাত্রায় পেশাদারিত্বের গণ্ডিতে থেকেই তারা নিজেদের কাজটা করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। মাঠে ও মাঠের বাইরে দলটির কর্মকাণ্ড তাই প্রতিনিয়ত জাগায় মুগ্ধতা। অবশ্য যে দলের অধিয়নায়ক কেন উইলিয়ামসন, যিনি আবার দেশটির ইতিহাসেরই অন্যতম ক্রিকেটারদের একজনও, তিনি সর্বদা যে ঠাণ্ডা, ধীরস্থির ব্যক্তিত্ব বয়ে বেড়ান, সেটাই যেন পুরো দলেরই পরিচায়ক। ২০১৯ বিশ্বকাপে সেই হারের পরও তাই ক্যাপ দিয়ে মুখ ঢেকে পরক্ষণেই যিনি হাসতে পারেন, প্রতিপক্ষকে অভিনন্দন জানাতে পারেন, তিনি ও তার দেশ সবার দ্বিতীয় প্রিয় দল হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ পিএম
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ পিএম
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ পিএম
আরও পড়ুন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার আশা শেষ ইউনাইটেডের |
“ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল কতটা ভালো করতে পারবে, তা নিয়ে সন্দিহান দেশের একমাত্র উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ।”