২৫ জুন ২০২৪, ২:৪৯ এম
দক্ষিণ আফ্রিকা রান তাড়া শুরুর পর বৃষ্টি যখন খেলা থামিয়ে দিল, তখন মনে মনে নিশ্চয় আপনিও বলেছেন - এ আর নতুন কী! দক্ষিণ আফ্রিকা, চাপের মুখে হার মানা, বৃষ্টির বাগড়া, বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রোটিয়াদের সাথে এসব নিয়মিত ঘটনা। খেলা আবার শুরু হওয়ার পরও চিত্রনাট্য মেনেই এগিয়ে যাচ্ছিল এবং সহজ ম্যাচ কঠিন করে প্রায় হেরেই যাচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে কাগিসো রাবাদা এক বাউন্ডারিতে বৃষ্টির বাধার পাশাপাশি প্রবল চাপ আর কুখ্যাত ‘চোকার্স’ ট্যাগকেও যেন সীমানা পার করলেন। শেষ অবধি আরও একটি রোমাঞ্চকর লড়াই জিতে সেমিফাইনালে চলে গেছে এইডেন মার্করামরা। খুব স্বাভাবিক, গল্পটা বড্ড অচেনা লাগছে আপনার কাছে। কারণ, এমনটা যে হওয়ার নয়!
ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো উইকেটে ১৭ ওভারে ১২৩ রান খুব কঠিন হওয়ার কথা নয়। তবে হারলেই বাদ, এই সমীকরণে বারবার আটকে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা আরও একবার ক্রমশ কঠিন করে ফেলে নিজেদের কাজ। ১৯তম ওভারে রাবাদার সেই চারের আগে প্রয়োজন ছিল ৭ বলে ৯ রান। অমন সময়ে ওই বাউন্ডারি না মারলে কী হতো তা অজানা, তবে ‘ক্লাচ মোমেন্টে’ অজস্রবার এমন একটা চার মারা বা ক্যাচ না ধরতে পারাই বারবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়েছে৷
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই জয় তাই দলটির জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের ইতিহাসের গল্পটা একটু বদলে দেওয়া, নিজেদের সবচেয়ে দুর্বল জায়গাকে শক্তিতে পরিণত করা, দক্ষিণ আফ্রিকা এই বিশ্বকাপে নিজেদের চেনাচ্ছে, খুব অচেনা রুপে!
গ্রুপ পর্বে চারটি ম্যাচ জেতা দক্ষিণ আফ্রিকার স্রেফ কিছু ইভেন্ট এদিক-ওদিক হলেই বিদায় ঘন্টা বাজত বেশ আগেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই ‘লেগবাই কান্ড’, কেশভ মহারাজের শেষ ওভারে তিনটি ফুল টস দিয়েও বেঁচে যাওয়ার কথা কীভাবে ভুলবেন? মাহমুদউল্লাহ যে শটে ক্যাচ আউট হয়েছেন, অধিকাংশ দিনেই তা ছক্কাই হবে। সেদিন হয়নি।
কিংবা নেপালের গুলশান ঝা'র শেষ বলে ‘ব্রেইনফেড’ হয়ে রান-আউট হওয়ার মতো ঘটনা প্রতিদিন ঘটে না। কেন রান সম্পন্ন না করেই তিনি মাঝপথে থেমে গেলেন? এসব ঘটনা দশদিনের একদিন ঘটে, আর সেই একদিন ভাগ্যক্রমে দুই বারই গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে।
ভাগ্য আপনার পক্ষে থাকলে আপনার তখন করণীয় একটাই - দুহাতে তা কাজে লাগানো। আর সেটা করেই একে একে টানা সাত ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালর টিকেট কেটে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা৷ সুপার এইটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেই যার জলজ্যান্ত উদাহারণ।
হাতে ৬ উইকেট নিয়ে ১৮ বলে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল মাত্র ২৫ রান। কিন্তু বল হাতে নিজেদের অবিশ্বাস্য স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে প্রবল চাপের মুখে সেই রানও ডিফেন্ড করে ফেলে রাবাদা-নরকিয়ারা। শেষ ওভারে ফিফটি করা হ্যারি ব্রুকের যে কঠিন ক্যাচটি নেন অধিনায়ক মার্করাম, নকআউটে এরচেয়েও সহজ ক্যাচ ফেলে বাদ পড়ার ইতিহাস আছে দলটির। সেই ক্যাচটি যদি ড্রপ হতো? মনে রাখা দরকার, সেই ম্যাচটি হারলেও সুপার এইটেই বিদায় নিতে হত দলটিকে।
কিন্তু তা আর হয়নি। এভাবেই প্রথমে ভাগ্যকে পাশে পাওয়ার পর নিজেদের বিশ্বাসটাও যেন ফিরে পাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা। ফলে বাংলাদেশ, নেপালের কাছে হারের দুয়ার থেকে ফিরে আসা দলটি প্রবলভাবেই সুবাস পাচ্ছে অধরা একটি বিশ্বকাপের। ভাগ্য, স্কিল, অভিজ্ঞতা, শক্তিমত্তা সবই আছে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে। প্রয়োজন শুধু দুই ম্যাচে নিজেদের স্নায়ু ধরে রাখা আর বিশ্বাস রাখা, ‘আমরা চোকার্স নই’। কাজটা ভীষণ ভীষণ কঠিন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম যে খুব কাছে গিয়েও তা পারেনি। রাবাদারা পারবেন? বাস্তবতা তো বলছে, এবারই সেরা সুযোগ। কিন্তু দলটার দক্ষিণ আফ্রিকা, সেটাও তো ভুলে গেলে চলবে না!
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ পিএম
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ পিএম
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৪ পিএম
আরও পড়ুন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার আশা শেষ ইউনাইটেডের |
“ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল কতটা ভালো করতে পারবে, তা নিয়ে সন্দিহান দেশের একমাত্র উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ।”