১০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
পেপ গার্দিওলা ইংল্যান্ডে পাড়ি জমানোর পর থেকে ম্যানচেস্টার সিটি খেলে চলছে দুর্দান্ত ফুটবল। সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রিমিয়ার লিগকে বানিয়ে ফেলেছে অনেকটাই একঘেয়েমি। টানা চারবার জিতেছে প্রিমিয়ার লিগ। সেই দলটিই এবার রীতিমত ধুঁকছে। ১৮ বছর পর সিটি প্রথমবার হেরেছে টানা চার ম্যাচ। তবে কী গার্দিওলার সিটির রাজত্বের এটাই শেষ? অভিজ্ঞ এই কোচ মনে করছেন, হয়ত এবার পালাবদলের সময় হয়েছে।
গত শনিবার ব্রাইটনের সাথে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে সিটি প্রথমে লিড নিয়েছিল আর্লিং হলান্ডের গোলে। তবে এরপর দুই গোল হজম করে হেরে বসে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। তাতে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ হারের তেতো স্বাদ পেতে হয়েছে সিটিকে। আর কোচ হিসেবে এই প্রথম টানা চার ম্যাচে পরাজয়ের অভিজ্ঞতা হল গার্দিওলার।
আন্তর্জাতিক বিরতির আগে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সাথে সিটির পয়েন্টের ব্যবধান এখন পাঁচ। চোট সমস্যার যে হাল, সাথে ঠাসা সূচি ও দলের ফর্ম, সব মিলিয়ে এবার কাজটা কঠিনই হতে যাচ্ছে দলটির জন্য। সেটা যেন আগেই মেনে নিলেন গার্দিওলা। “হয়ত গত সাত বছরে আমরা ছয়টি প্রিমিয়ার লিগ জেতার পর এটা নতুন একটা দলের জেতার সময় হয়েছে।”
গার্দিওলা কোচ হওয়ার পর থেকে ক্রমেই ইউরোপের অন্যতম শীর্ষ একটি দলে পরিণত হয়েছে সিটি। টানা লিগ জেতার মধ্যেও শূন্যতা ছিল একটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের, ২০২৩ সালে সেটাও পূর্ণ হয়ে গেছে। সাথে ছিল মাত্র দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ‘ট্রেবল’ জয়ের কীর্তি। সেই সিটি এবার যেভাবে অধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে, তাতে অনেকেই এই মৌসুমে দলটির সাফল্যময় যুগের ইতি দেখছেন।
গার্দিওলা কী ভাবছেন? “লোকেরা তো এটাই চায়, তাই না? এটা স্বাভাবিক। আমরা অনেক কিছুই জিতেছি। আমি শুধু (চোট কাটিয়ে) সব খেলোয়াড়দের একসাথে পেতে চাই।”
এই মৌসুমে সিটির দুর্ভোগের অন্যতম কারণ চোটের মিছিল। মূল একাদশ সেভাবে টানা খেলাতেই পারছেন না গার্দিওলা। এই মুহূর্তে যেমন মাঠের বাইরে আছেন নাথান আকে, জন স্টোনস, জ্যাক গ্রিলিশ ও রুবেন দিয়াস। আর লম্বা সময়ের জন্য আগেই ছিটকে গেছেন রদ্রি ও অস্কার বব।
১০ নভেম্বর ২০২৪, ৮:২১ পিএম
চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ছন্দে আছে লিভারপুল, আর তাতে গোলের পর গোল করে বড় অবদান রেখে চলেছেন মোহামেদ সালাহ। অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে গোল করে ও করিয়ে নাম লিখিয়েছেন রেকর্ডের পাতায়। প্রিমিয়ার লিগের একটি ম্যাচে একটা অ্যাসিস্টের পাশাপাশি একটি গোল, লিগে এই কীর্তি সর্বোচ্চ ৩৫ বার করেছিলেন রুনি। সালাহ এবার পাশে বসেছেন সাবেক ইংলিশ তারকার।
ভিলার সাথে ম্যাচের ২০তম মিনিটে দারউইন নুনেসকে দিয়ে গোল করান সালাহ। ম্যাচ শেষের ছয় মিনিট আগে নিজেও পান গোলের দেখা। লিভারপুলের পরবর্তী ম্যাচ আগামী ২৪ নভেম্বর। সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ম্যাচে ওই ম্যাচেই হয়ত ভেঙে যাবে রুনির রেকর্ডটা। আর না ভাঙলেও তাকে ছাড়িয়ে যেতে সামনে পরে আছে পুরো মৌসুমই।
চলতি বছর সালাহ আর লিভারপুল আছে দারুণ ছন্দে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চার রাউন্ড শেষে সবার ওপরে অল-রেডস। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সিটির চেয়ে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে লিভারপুল। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে এখন পর্যন্ত সালাহ গোল করেছেন ৮টি। তার চেয়ে বেশি গোল করেছেন কেবল একজনই, ১২ বার গোল করা ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার আর্লিং হলান্ড।
আর সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের তালিকায় সালাহ আছে দুই নম্বরে। মৌসুমে সালাহ গোল করতে সহযোগিতা করেছেন ৬বার। ৭ অ্যাসিস্টে সবার ওপরে আছে আর্সেনাল স্ট্রাইকার বুকায়ো সাকা। তবে, গোল আর অ্যাসিস্ট মিলিয়ে সালাহই সবচেয়ে এগিয়ে। ৮ গোল আর ৬ অ্যাসিস্ট, সব মিলিয়ে সালাহ’র সংখ্যা ১৪।
২০১৭ সালে ৪৪ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফার ফি’তে রোমা থেকে লিভারপুলে এসেছিলেন সালাহ। মিশরীয় তারকা এখন পর্যন্ত ৩৬৬ ম্যাচ খেলে ২২১ গোলের সাথে অ্যাসিস্ট করেছেন ৯৯টা। লিভারপুল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ফুটবলার মানা হয় সালাহকে।
মিডফিল্ডার হলেও ক্লাব ও জাতীয় দলে জুড বেলিংহাম গোলের সামনে ভীষণ কার্যকর একজন খেলোয়াড়। তবে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়ে গত মৌসুমে গোলের পর গোল করে চমক দেখিয়েছেলন ইংলিশ তারকা। প্রত্যাশা তাই এবার বেশিই তাকে ঘিরে। তবে এই মৌসুমে প্রথম গোলের দেখা পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে এই সপ্তাহ পর্যন্ত। এমন ছন্দপতনের কারণ খুঁজে বের করেছেন বেলিংহাম। তার মতে, মাঠে একটু বেশি ভালো থাকার কারণে জালের দেখা পেয়ে বেগ পেতে হচ্ছে তাকে।
ওসাসুনার বিপক্ষে গত শনিবারের ম্যাচের ৪২তম মিনিটে গোল করেন বেলিংহাম। এরপর তার, দলের ও সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মত। মৌসুমে প্রথম গোল বলে কথা। অথচ গত মৌসুমে শুধুমাত্র লা লিগাতেই ১৯টি গোল ছিল তার নামের পাশে। গতকালের ম্যাচের আগে শেষবার রিয়ালের জার্সিতে গোল করেছিলেন সেই গত মে মাসে।
রিয়াল মাদ্রিদ টিভির সাথে এক আলাপচারিতায় এই গোলখরা সম্পর্কে অবশ্য বিশেষ চিন্তার কিছু না দেখার কথাই জানালেন বেলিংহাম। “আমি মাঠের বিভিন্ন অংশে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করছি। এটা সেই কাজগুলোর মধ্যে একটা, আমি দলের জন্য যে কোনো কিছুই করব। হয়ত আমি একটু বেশি চেষ্টা করেছি এবং (গোলের সামনে) একটু বেশিই ভালো ছিলাম। এখন থেকে আমি এটা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। যদি সেটা নাও হয়, তাহলে আমি যেকোনো উপায়ে দলকে সাহায্য করার চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
এই মৌসুমে বেলিংহামের গোল না পাওয়ার পেছনে তার ফিনিশিং দক্ষতার চেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফরমেশন ও তার পজিশনও। গত মৌসুমে ওপরের দিকে উঠে খেললেও এবার কিলিয়াব এমবাপের আগমন, টনি ক্রুসের অবসর ও দলে চোটের ছোবলে অনেকটাই ভিন্ন ভূমিকায় খেলতে হচ্ছে বেলিংহামকে। নিচে নেমে খেলার কারণে পাচ্ছেন না সেভাবে গোলের সুযোগও।
দলের জন্য নিবেদিত বেলিংহাম তাই গোল কম করা নিয়ে বাড়তি আক্ষেপ করছেন না। “আমার মনে হয় আমি সাধারণত যা করি, তাই করছি। কিন্তু আজকে একমাত্র পার্থক্য হল আমি একটি গোল করতে পেরেছি। অনেক লোক এটা নিয়ে কথা বলছিল, কারণ গত বছর আমি প্রচুর গোল করেছিলাম। তবে আমি মনে করি, এই বছর আমি একটি ভিন্ন ভূমিকা পালন করছি।”
এই মৌসুমে সেভাবে গোল না পেলেও সমর্থকদের ভালোবাসায় কমতি হয়নি বেলিংহামের জন্য। ওসাসুনা ম্যাচে মাঠ ছাড়ার তাকে সম্মান জানানো হয়েছে দাঁড়িয়ে। এতে আপ্লুত তরুণ এই ফুটবলার। “আমি এখনও এই ক্লাবের হয়ে খেলার জন্য নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তি বলে মনে করি। এমনকি খারাপ সময়েও আমি এখনও এখানে থাকতে পেরে কৃতজ্ঞ। (সমর্থকদের) ভালোবাসা পেয়ে আমি সত্যিই গর্বিত বোধ করছি। তাদের জন্যই তো আপনি খেলেন। আপনি চাইবেন লোকেরা যাতে খুশি মনে ঘরে ফিরে যায়। এটি আসলেই একটা ভাল অনুভূতি।”
১৩ ঘণ্টা আগে
১৬ ঘণ্টা আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
১৭ দিন আগে